অনুবাদ
চন্দ্রকান্তা

আজ থেকে প্রায় ১৪০ বছর আগে একজন বিখ্যাত হিন্দি লেখক বাবু দেবকীনন্দন খত্রী চন্দ্রকান্তা নামে একটা উপন্যাস রচনা করেছিলেন, যেটা প্রকাশিত হবার পরেই তৎকালীন হিন্দি, উর্দু সাহিত্যের জগতে তো বটেই বরং আসমুদ্রহিমাচল জুড়ে আলোড়ন পড়ে গেছিল। মূলত প্রেম কাহিনী হলেও এর মধ্যে রহস্য রোমাঞ্চ গুপ্তচরবৃত্তি চক্রান্ত রাজতন্ত্র সবকিছুই আছে।
কোন যুদ্ধে জয়লাভ করতে গেলে রণনীতিই প্রথম এবং অন্তিম বিকল্প হওয়া উচিত, সংখ্যা দিয়ে যুদ্ধকে এড়ানো সম্ভব, জেতা সম্ভব নয়, চন্দ্রকান্তা উপন্যাস পড়তে এই কথার অর্থটা মর্মে মর্মে পাঠক উপলব্ধি করতে পারবেন।
চন্দ্রকান্তা উপন্যাসকে অনুবাদক সিমরান দাস প্রথমবারের জন্য আনকাট এবং আনসেন্সার্ড অনুবাদের মাধ্যমে বাঙালী পাঠকদের কাছে পৌছে দিলেন। চন্দ্রকান্তা উপন্যাসের মধ্যে প্রচুর উর্দু শব্দের উপস্থিতি আছে অনুবাদিকা সিমরান দাস সেগুলোকে বাংলাতে সুন্দর ভাবে সহজ ভাষাতে অনুবাদ করেছেন।
চ্যান্সেস- জ্যাকি কলিন্স

আমেরিকার বহুল চর্চিত লেখিকা জ্যাকি কলিন্স, প্রায় পুরো জীবন কাটিয়েছেন লস এঞ্জেলেস এবং তাঁর লেখা ৩২টি উপন্যাস নিউ ইয়র্ক টাইমসের বেস্টসেলার তালিকায় রয়েছে। তাঁর বইগুলি ৫০০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে এবং ৪০টি ভাষায় অনুবাদ হয়েছে।
চ্যান্সেস, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য তাঁর সর্বশ্রষ্ঠ লেখা বলে বিবেচনা করা যেতে পারে।
প্রথম থেকে শেষ অবধি উপভোগ্য এবং টানটান থ্রিলিং এবং উত্তেজনার ভরপুর এই ৬০০ পাতার উপন্যাসটি পাঠককে টেনে রাখবে। উপন্যাসটি বর্তমানে শুরু হয়েছে তার পর অতীতে গেছে , প্রত্যেক জায়গাতেই চরিত্রের নাম এবং সাল দিয়ে শুরু করা আছে ফলে খেই হারিয়ে যাবার কোন ভয় নেই।
বইটার মধ্যে তিনটে পর্ব আছে! প্রথম পর্ব টা মুলত মূল চরিত্র জিনো এবং ক্যারীর অতীতের অন্ধকারময় জীবনের ঘটনা, দ্বিতীর পর্বে জিনোর মেয়ে লাকীর কর্মকান্ড! চক্রান্ত, পাল্টা চক্রান্ত, আইনের বেড়াজালে জিনোর ফেঁসে গিয়ে দেশ ছাড়া। তৃতীয় তথা শেষ পর্বে আছে জাল গুটোনো এবং প্রতিশোধের কাহিনী।
কাহিনীর পরতে পরতে আছে পাশে থেকে বিশ্বাস অর্জন করে সাপ হয়ে দংশন করা চরিত্র, ভালোবাসার মানুষের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে উন্মত্ত নারী, পতিতালয়, ড্রাগ সিন্ডিকেট, সংঘবদ্ধ অপরাধী, আইনের চাল, সবমিলিয়ে আগের শতাব্দীর আটের দশকের হলিউডের অন্যরকম, সাধারণ মানুষের চোখে না ধরা পড়া দিক।
বইটি অনুবাদ করেছেন ইন্দ্রাণী তুলি!
** উপন্যাসটি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য**
অভ্যুদয়ের শার্লক হোমস্ সমগ্র, প্রথম খণ্ড– উপন্যাস

বহুদিন উৎসুক প্রতীক্ষার পর অবশেষে অসংখ্য শার্লক হোমস্ প্রেমীর জন্যে সুখবর। অভ্যুদয় প্রকাশ-মন্দির থেকে প্রকাশিত সেই সাড়াজাগানো শার্লক হোমস্ সমগ্রের ই বই সংস্করণ।
১৯৮০ সালে প্রথম বাংলায় পূর্নাঙ্গ অনুবাদে শার্লক হোমস্ সমগ্র প্রকাশ করে অভ্যুদয় প্রকাশ-মন্দির। দক্ষ অনুবাদকদের মূলানুগ ও সাবলীল অনুবাদ বিদগ্ধ পাঠক থেকে সাধারন পাঠক—সবার অকুণ্ঠ প্রশংসা কুড়োয়। কিন্তু তারপর দুর্ভাগ্যবশত বন্ধ হয়ে যায় অভ্যুদয়, সেইসঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় এই বইটির প্রকাশনা।
কিন্তু পাঠকের স্মৃতিতে চিরস্থায়ী হয়ে থেকে যায় এই বই, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সঞ্চারিত হয় সে স্মৃতি! ফলে প্রথম প্রকাশের চল্লিশ বছর পরেও বইটির জনপ্রিয়তা এখনও অটুট। পাঠকের মুখে মুখে ফেরে এই বইটির কথা। অনেকেই চাইছিলেন বইটি যাতে নতুন করে প্রকাশ পায়। তাই সবার দাবিকে সম্মান জানিয়ে অভ্যুদয় প্রকাশ- মন্দির থেকে নব সাজে সজ্জিত হয়ে আত্মপ্রকাশ করল শার্লক হোমস্ সমগ্র, প্রথম খণ্ড– উপন্যাস। আসবে বাকি গল্পগুলোও।
পন্নিয়িন সেলভান - প্রথম খন্ড

কল্কি কৃষ্ণমূর্তি, পন্নিয়িন সেলভান স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে তার নিজের পত্রিকাতে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করেছিলেন যা দীর্ঘ চার বছর ধরে চলেছিল। তামিল ইতিহাসের এই স্বর্ণযুগের কাহিনী অত্যন্ত জনপ্রিয় হযেছিল, সাপ্তাহিক সংখ্যা সংগ্রহ করার জন্যে লোকে ভোর থেকে রেলস্টেশনে লাইন দিত।
এক হাজার দুশো বছর আগে, রাজা বিজয়ালয় চোল (846 – 871 অব্দ) যখন পল্লব রাজ্য জয় করেন এবং থাঞ্জাভুরকে চোলদের রাজধানী শহর হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেন তখন থেকেই দক্ষিণ ভারতের চোলরা রাজনৈতিক ভাবে শিখরে উঠেছিল। এরা ইতিহাসে পরিচিত ইম্পেরিয়াল চোল নামে। ইম্পেরিয়াল চোল যুগকে দক্ষিণ ভারতীয় ইতিহাসে একটি স্বর্ণযুগ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
একসময় যখন চোলসম্রাট সুন্দর চোল থাঞ্জাভূরে অসুস্থ এবং তার দুই পুত্রই দূরে, যুবরাজ আদিত্য চোলরাজ্যের উত্তরে কাঞ্চিতে যুদ্ধরত এবং আরুলমোঝি দক্ষিণে সমুদ্রপারের এলংগাইতে, রাজধানীতে এক রহস্যময় নারী নন্দিনী শুরু করল এক সাম্রাজ্যের পতনের ষড়যন্ত্র, তার ঊর্ণজালে আবদ্ধ চোলরাজ্যের সবথেকে ক্ষমতাশালী অভিজাত বংশ। রাজকুমারী কুন্দাভাই একাকীনী রাজধানীতে, তিনি হাল ছেড়ে দিলেন না কিন্তু তাঁর দরকার তাঁর ভাইদের।
এখান থেকেই আমাদের গল্পের শুরু !
ডিভোর্সী নারীদের পৃথিবী

দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ ফুল অফ ডিভোর্সড উওমেন, আমেরিকার বিতর্কিত লেখিকা জ্যাকি কলিন্স ২৪টিরও বেশি বই লিখেছেন। তাঁর বই এ পর্যন্ত ৪০টি ভাষায় ৪০০ মিলিয়ন কপিরও বেশি বিক্রি হয়েছে। জ্যাকি কলিন্সের বই মানুষ এমন উন্মুখ হয়ে পড়ে কারণ জ্যাকি সহজ-সরল ভাষায় পাশ্চাত্য সমাজের নানান দিক চমৎকারভাবে তুলে আনেন। তাঁর কাহিনীতে থাকে আঁটসাঁট গাঁথুনি, একবার হাতে নেয়ার পরে শেষ না করে ওঠার জো নেই। জ্যাকি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি যা লেখেন, প্রায় সবই বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে। এজন্যেই তাঁর কাহিনীর সঙ্গে পাঠক একাত্ম হয়ে যায়। দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ ফুল অব ডিভোর্সড উওমেন সুলিখিত একটি উপন্যাস। এ বইকে ইরোটিক-রোমান্টিক হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। কারণ প্রেম-ভালোবাসার সঙ্গে অনুষঙ্গ হিসেবে অনিবার্যভাবে এসেছে যৌনতা। তবে কোথাও অপ্রাসঙ্গিক যৌন-বর্ণনা এতে নেই এবং অনুবাদক হিসেবে আমি তা সেন্সর করতেও যাইনি। এটি আনসেন্সরড এবং আনকাট একটি বই। যারা ইরোটিক রোমান্টিক উপন্যাস পছন্দ করেন, তাদের ভালো লাগবে এ বই।
দ্যা লাভ কিলার্স

মাফিয়া সর্দার এনজিও বাসালিনো কাউকে তার পাকা ধানে মই দিতে দেয় না। তাই বিপলবী মার্গারেট ব্রাউনের ডাকে যখন যৌনকর্মীরা এক এক করে মূলস্রোতে ফিরে যাচ্ছে, এনজিও তাকে সরিয়ে দিল। তিনজন আকর্ষণীয় মহিলা এনজিওর তিন ছেলেকে কব্জা করে তার পতন চাইল। আপাত-নীরিহ, সংবেদনশীল বেথ নিউ ইয়র্কে ফ্র্যাঙ্কের কাছে যাবে; কামুক আন্ডারগ্রাউন্ড ফিল্মস্টার রিও লন্ডনে অ্যাঞ্জেলোর সঙ্গে ফষ্টিনষ্টি করবে; আর অপরূপা সুন্দরী, ফ্যাশন সচেতন, ভ্রমণ বিলাসী লারা লস অ্যাঞ্জেলেসে গিয়ে নিককে ফাঁদে ফেলবে। কিন্তু এটা খুব বিপজ্জনক এক খেলা। কামনা, আকাঙ্খা আর হত্যা চক্রান্তের এক মোহময় জাল বেছানো রয়েছে। আর আদিম, নিষিদ্ধ সেই প্রথম রিপুর তাড়না, কারণ বাসালিনোর তিন ছেলেদের জন্য তিন মহিলারই অস্ত্র এক…
গোয়েন্দা সেক্সটন ব্লেক

উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিক, তখন ভিক্টোরিয়ান যুগ শেষের পথে, এইসময়ে ব্রিটিশদের পড়ার অভ্যাসে গভীর পরিবর্তন ঘটছিল। দ্য স্ট্র্যান্ড ম্যাগাজিনে ততদিনে ডয়েলের হাতধরে এসে গেছেন শার্লক ।হোমসের সাফল্যের ফলে ডিটেকটিভ গল্পের দিকে লেখক এবং পাঠক উভয়েরই আগ্রহ আরো বাড়তে থাকে এবং এই ধারার আরো অনেক গল্প বার করার চেষ্টা হতে থাকে।
এমনই এক যুগসন্ধিক্ষণে আবির্ভাব ঘটল আলফ্রেড হার্মসওয়ার্থ-এর, যিনি 'হাফপেনি মার্ভেল’ ম্যাগাজিন প্রকাশ করতে শুরু করেন, এই "দ্য হাফপেনি মার্ভেল" এর পাঁচ নম্বরের ইস্যুতে সম্পাদক ঘোষণা করেছিলেন যে পরের সংখ্যায় আসছে এক নতুন গোয়েন্দা , এইভাবে আবির্ভূত হলেন সেক্সটন ব্লেক। প্রথম গল্পটি লিখেছিলেন হ্যারি ব্লেথ ( Harry Blyth), হ্যাল মেরিডিথ (Hal Meredeth) ছদ্মনামে ! এই নতুন গোয়েন্দা পাঠকশ্রেণীর খুব আনুকূল্য পায় এবং সেক্সটন ব্লেকের গল্প চলতে থাকে পরবর্তী প্রায় একশো বছর ধরে, গল্প উপন্যাস কমিক স্ট্রিপ এমনকি সিনেমা পর্যন্ত অনেক লেখকের হাত ধরে। ব্লেক বুদ্ধিমান, তার সবসময়ের সংগী তার সহকারী টিনেজার টিংকার আর একটা ভয়ানক কুকুর। অত্যন্ত গতিশীল, বুদ্ধির পরীক্ষা নেয় ব্লেকের গল্প। শার্লক যেমন শহুরে পাঠকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, সেক্সটনও কিন্তু খুব একটা পিছিয়ে ছিল না। লন্ডন ও তৎসংলগ্ন কান্ট্রিসাইডে সেক্সটন ব্লেকের জনপ্রিয়তা ছিল শিখরে। পরবর্তীকালে সেক্সটনের জনপ্রিয়তা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে অন্যান্য অনেক ভাষার সাথে সেক্সটন ব্লেক অনূদিত হতে থাকেন আরবী এমন কী হিন্দিতেও।
এই বার বাংলায় সেক্সটন অনূদিত হয়ে এলেন বইরাগ প্রকাশনীর হাত ধরে। আমাদের এইখণ্ডে ব্লেকের ১০টি গল্প রয়েছে যা মূলত 1908 এবং 1909 সালে প্রকাশিত হয়েছিল। অনুবাদ করেছেন অর্চন চক্রবর্তী।
দেশ দেশান্তর (দেশ-বিদেশের কবিতার অনুবাদ)

শতঞ্জিৎবাবু প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসের ছাত্র, প্রবাসী, এখন অবসর জীবন কাটাচ্ছেন। তাঁর ভালোলাগা বিষয় - কবিতা। রুচি রাজনীতি ও সামাজিক বিষয়ে । এই ভুবনগ্রামে মানুষ সাগর পাহাড় কি ভাষা - যার দ্বারাই আপাত গন্ডিবদ্ধ থাকুক না কেন, মানুষের জীবনযাপন, কষ্ট, আশা, নিরাশা, পীড়ন, অন্যায়, ভালোবাসা - এইসব কিন্তু প্রায় একরকম। আর কবিতার ভাষা সর্বজনীন, তা দেশকালের গন্ডিতে আবদ্ধ না। তাই ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল বা বিদেশ - কবিদের প্রকাশ সমধর্মী - শতঞ্জিৎবাবু তাঁর রুচিমতো এরকমই কিছু কবিতার বাংলা অনুবাদ করেছেন।
আশা করি পাঠকদের ভালো লাগবে।
ড্রাকুলা

কিছু নাম আছে, যা শরীরে শিহরণ জাগানোর জন্য যথেষ্ট। যেমন ব্রাম স্টোকারের ‘ড্রাকুলা’। ১৮৯৭ সালে লেখা তাঁর এই বইয়ের অনুপ্রেরণায় একাধিক চলচ্চিত্র, অনুষ্ঠান, ভ্যাম্পায়ার বা রক্তপায়ীদের নিয়ে কাহিনি তৈরি হয়েছে এবং হয়ে চলেছে। দর্শক এবং পাঠকদের মনে কাউন্ট ড্রাকুলার কাহিনি গেঁথে গিয়েছে। অবশ্য 'কাউন্ট ড্রাকুলা'-র বেশির ভাগটাই লেখকের কল্পনা। তবে ব্রাম স্টোকার তাঁর উপন্যাসের চরিত্রের নামকরণ করেছিলেন বাস্তবে্র এক 'ড্রাকুলা'র নামানুসারেই। বাস্তবের কাউন্ট ড্রাকুলা হলেন ভ্লাদ দ্য ইম্পেলার। রোমানিয়ার এক ঐতিহাসিক অঞ্চল ওয়ালাশিয়া। তারই প্রিন্স ছিলেন ভ্লাদ দ্য ইম্পেলার বা তৃতীয় ভ্লাদ। এই প্রিন্সেরই আর এক নাম ছিল ড্রাকুলা। যদিও ওই নামটি ছাড়া কাহিনির ড্রাকুলা এবং ওয়ালাশিয়ার প্রিন্সের আর কোনও চারিত্রিক মিল ছিল না। ইতিহাসবিদদের মতে, উপন্যাসটি লেখার আগে ওয়ালাশিয়াতে এসেছিলেন ব্রাম। সেখানেই ভ্লাদ দ্য ইম্পেলারের কথা শোনেন এবং সেখান থেকেই উপন্যাসের চরিত্রের জন্য ‘ড্রাকুলা’ শব্দটি নেন তিনি।
অন্ধকার নামছে

ভয় কী? ভয় কি একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া, নাকি পুরোটাই মনস্তাত্ত্বিক? মানুষ আসলে ভয় পায় কেন? কী কী জিনিসে বা কী কী কারণে ভয় পায় মানুষ ?
অশুভ কোনও অজানা আশঙ্কা থেকে 'ভয়'–এর সৃষ্টি। কিন্তু মানুষ মাত্রেই অন্ধকারকে ভয় পায়, অস্বস্তি বোধ করে, মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, এর মূল কারণ আমাদের জিনে মিশে আছে প্রাচীন অন্ধকার, আদিম অন্ধকারে বসবাসের অভিজ্ঞতা।
সৃষ্টির ঊষালগ্নে মানুষ ছিল বড় অসহায়। গুহা বা অন্য প্রাকৃতিক আধারে তাদের নিতে হত আশ্রয়। কিন্তু আগুনের আবিষ্কার সবকিছু বদলে দিল। আগুন অজানা অন্ধকারকে চিনতে সাহায্য করল। সভ্যতা এগোল। তার সাথে সাথে এগোল মানুষের চিন্তাভাবনা, মানুষ আরও পরিণত হতে থাকল। মানুষ কল্পনা করতে শিখল, অব্যাখ্যাতক লৌকিকতার ঊর্ধ্বে উঠে বুঝে নিতে চাইল। গল্প-কাহিনিরা জন্ম নিল। তার হাত ধরাধরি করে এল সাহিত্য। আর সাহিত্যের একটা বড় অংশ অধিকার করে থাকল ভয়, ভয়ের গল্প, ভূতের গল্প, অলৌকিক গল্প। আসলে, এই বিশ্বচরাচর - সৃষ্টির আদিম কথাটাই হল ভয়। সমস্ত প্রাণী জগতের অন্তরের মর্ম জগতে অবস্থান করে ভীতি।
এই রকম গল্প পড়ার অভিজ্ঞতাই আলাদা, আর সেইসব গল্প যদি হয় বিশ্বের খ্যাতনামা সাহিত্যিকদের, তাহলে তো সোনায় সোহাগা!
বাছাই করা বিশ্ব সাহিত্যের প্রতিনিধিত্বমূলক কিছু অন্ধকার গল্পের অনুবাদ করেছেন মিতা ঘোষ। 'অন্ধকার নামছে' - সেই অনুপম গল্পগুলির বাংলা সংকলন।
সঙসপ্তক কাহিনী

আলেক্সিস কিভি (১০ অক্টোবর ১৮৩৪-৩১ ডিসেম্বর ১৮৭২) বেঁচে থাকতে তাঁর শ্রেষ্ঠ বই সঙসপ্তক কাহিনি-র সাফল্য দেখে যাননি। কিভি যে আধুনিক ফিনল্যান্ডের বরেণ্য লেখক এবং জাতীয় চেতনার পথিকৃৎ, একথা বুঝতে অনেক দেরি হয়েছে, এমনকি তাঁর স্বদেশেও। হেলসিঙ্কির রাউতাতিয়েন্তোরি চত্বরে, ফিনিশ জাতীয় নাট্যশালার সামনে, তাঁর মূর্তি বসানো হয় ১৯৩৯ সালে (ভাস্কর: ভ্যাইন্যো আলতোনেন)। বাংলার আগে মোট চৌত্রিশটা ভাষায় কিভির এই উপন্যাসের অনুবাদ বেরিয়েছে, তার মধ্যে এশীয় ভাষা আরবি, চিনে, জাপানি, তুর্কি, ফারসি, হিব্রু।
ফিনল্যান্ডের যে সাত ভাই এই অনূদিত উপন্যাসের নায়ক, তাদের সঙ্গে মহাভারতের ওই দৃঢ়সংকল্প সাহসী যোদ্ধাদের কিছু মিল সত্যিই পাওয়া যায়। কিন্তু ঙ আর দন্ত্য স দিয়ে “সঙ-সপ্তক” বানান কেন? বানানটার কাজ হল মনে করিয়ে দেওয়া যে ওই সাতজন তরুণকে ঠাট্টা করবার জন্যে শত্রুরা যে গান বেঁধেছিল তাতে ওদের বলা হয়েছিল সাতটা সঙ। লোকজনের নির্মম হেনস্তা গায়ে মেখে ওরা জীবনযুদ্ধে এমন রণনীতি বেছে নিয়েছিল যাতে বিদ্রুপের জবাব দিতে পারে। শত্রুদের চোখে চোখ রেখেই ওদের সেই অভাবনীয় জয়যাত্রা, যেটার গুণে এই উপন্যাস বিশিষ্ট সার্থকতা অর্জন করেছে।
এ গল্পের সঙ্গে বাঙালি পাঠকের কী সম্পর্ক? সঙসপ্তক কাহিনির মূল বিষয় হল, ব্রাত্যরা কীভাবে নিজেদের আত্মসম্মান অটুট রেখেও শিক্ষালাভ করে সমাজের মূলস্রোতে স্বীকৃতি পেতে পারে। দারিদ্র্য ও বঞ্চনার ফলে যেসব মানুষ বহু শতাব্দী ধরে শিক্ষার সুযোগ পায়নি, আজ তারা অভূতপূর্ব অনুপাতে ইস্কুল কলেজে যাচ্ছে। নয়া সাক্ষরের অদম্য উৎসাহে ভরা কৌতূহলী চোখে এদিক ওদিক তাকিয়ে জেনে নিচ্ছে কোন পথে চললে পরবর্তী প্রজন্ম এই দুর্দশার শৃঙ্খল কেটে বেরোতে পারবে। আমাদের সারা সমাজ জুড়ে এই যে বিরাট মন্থন চলছে, শিক্ষাপ্রাপ্তি আর মর্যাদালাভের দিকে এগিয়ে চলার এই নাটকীয় সময়টাকে পরিষ্কার বুঝতে পারবার জন্যে স্পষ্টতই বাঙালি পাঠকমাত্রেরই সঙসপ্তক কাহিনি পড়া উচিত।
টারজান অমনিবাস

এসবই হল লোকমুখে শোনা গল্প। রানী ভিক্টোরিয়ার সময়কার ব্রিটিশ উপনিবেশ দপ্তরের নথিপত্রে এর নাকি সামান্য একটু উল্লেখ আর একটা হলদে হয়ে যাওয়া ডায়েরী বিষয়ে গুজব-এসবকে কোনো গল্পের যাথার্থ্যের প্ৰমাণ বলা যায় না। কিন্তু লোকমুখে বলা গল্পের কি যথার্থতা থাকে না? থাকে থাকে, বিশ্বাস না করলে পড়ে ফেলুন চিরকালীন টারজানের গল্পগুলি , লীলা মজুমদারের অসাধারণ অনুবাদে !