বাংলা ই-বই
অন্ধকার নামছে
ভয় কী? ভয় কি একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া, নাকি পুরোটাই মনস্তাত্ত্বিক? মানুষ আসলে ভয় পায় কেন? কী কী জিনিসে বা কী কী কারণে ভয় পায় মানুষ ?
অশুভ কোনও অজানা আশঙ্কা থেকে 'ভয়'–এর সৃষ্টি। কিন্তু মানুষ মাত্রেই অন্ধকারকে ভয় পায়, অস্বস্তি বোধ করে, মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, এর মূল কারণ আমাদের জিনে মিশে আছে প্রাচীন অন্ধকার, আদিম অন্ধকারে বসবাসের অভিজ্ঞতা।
সৃষ্টির ঊষালগ্নে মানুষ ছিল বড় অসহায়। গুহা বা অন্য প্রাকৃতিক আধারে তাদের নিতে হত আশ্রয়। কিন্তু আগুনের আবিষ্কার সবকিছু বদলে দিল। আগুন অজানা অন্ধকারকে চিনতে সাহায্য করল। সভ্যতা এগোল। তার সাথে সাথে এগোল মানুষের চিন্তাভাবনা, মানুষ আরও পরিণত হতে থাকল। মানুষ কল্পনা করতে শিখল, অব্যাখ্যাতক লৌকিকতার ঊর্ধ্বে উঠে বুঝে নিতে চাইল। গল্প-কাহিনিরা জন্ম নিল। তার হাত ধরাধরি করে এল সাহিত্য। আর সাহিত্যের একটা বড় অংশ অধিকার করে থাকল ভয়, ভয়ের গল্প, ভূতের গল্প, অলৌকিক গল্প। আসলে, এই বিশ্বচরাচর - সৃষ্টির আদিম কথাটাই হল ভয়। সমস্ত প্রাণী জগতের অন্তরের মর্ম জগতে অবস্থান করে ভীতি।
এই রকম গল্প পড়ার অভিজ্ঞতাই আলাদা, আর সেইসব গল্প যদি হয় বিশ্বের খ্যাতনামা সাহিত্যিকদের, তাহলে তো সোনায় সোহাগা!
বাছাই করা বিশ্ব সাহিত্যের প্রতিনিধিত্বমূলক কিছু অন্ধকার গল্পের অনুবাদ করেছেন মিতা ঘোষ। 'অন্ধকার নামছে' - সেই অনুপম গল্পগুলির বাংলা সংকলন।
দেশ দেশান্তর (দেশ-বিদেশের কবিতার অনুবাদ)
শতঞ্জিৎবাবু প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসের ছাত্র, প্রবাসী, এখন অবসর জীবন কাটাচ্ছেন। তাঁর ভালোলাগা বিষয় - কবিতা। রুচি রাজনীতি ও সামাজিক বিষয়ে । এই ভুবনগ্রামে মানুষ সাগর পাহাড় কি ভাষা - যার দ্বারাই আপাত গন্ডিবদ্ধ থাকুক না কেন, মানুষের জীবনযাপন, কষ্ট, আশা, নিরাশা, পীড়ন, অন্যায়, ভালোবাসা - এইসব কিন্তু প্রায় একরকম। আর কবিতার ভাষা সর্বজনীন, তা দেশকালের গন্ডিতে আবদ্ধ না। তাই ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল বা বিদেশ - কবিদের প্রকাশ সমধর্মী - শতঞ্জিৎবাবু তাঁর রুচিমতো এরকমই কিছু কবিতার বাংলা অনুবাদ করেছেন।
আশা করি পাঠকদের ভালো লাগবে।
গৌড়রাজমালা
বঙ্কিমচন্দ্র লিখিয়া গিয়াছেন,—“গ্রীণলণ্ডের ইতিহাস লিখিত হইয়াছে; মাওরি-জাতির ইতিহাসও আছে; কিন্তু যে দেশে গৌড়-তাম্রলিপ্তি-সপ্তগ্রামাদি নগর ছিল, সে দেশের ইতিহাস নাই।” উপাদানের অভাবকে ইহার প্রকৃত কারণ বলিয়া স্বীকার করা যায় না;—অনুসন্ধানচেষ্টার অভাবই প্রধান অভাব। যাহারা স্মরণাতীত পুরাকাল হইতে, বংশানুক্রমে এ দেশে বাস করিতে গিয়া, নানাবিধ জয়-পরাজয়ের ভিতর দিয়া বর্ত্তমান অবস্থায় উপনীত হইয়াছে, তাহাদিগের সহিত দেশের ইতিহাসের সম্বন্ধ সর্ব্বাপেক্ষা অধিক। তাহারা তথ্যানুসন্ধানে প্রবৃত্ত হইলেই, অনুসন্ধান-চেষ্টা প্রকৃত পথে পরিচালিত হইতে পারে। ইহা এখন সকলেই মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করিতেছেন। "
সত্যি কথা বলতে কি বাঙালির কাছে গৌড় , পালবংশ কি সেন বংশের নাম অচেনা না , আছে নানা গল্পগাথাও। কিন্তু যদি একলপ্তে গৌড়ের প্রাচীন ইতিহাস যা কিনা পালবংশ থেকে শুরু হয়ে সেনবংশ হয়ে খিলজীতে এসে থামে, সে সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে এই বইটি আপনার জন্যেই।
সামাজিক উপন্যাস
বিভূতিভূষণের উপন্যাসের পটভূমি পল্লীবাংলার গ্রামাঞ্চল এবং শহর জুড়ে বিস্তৃত। এখানে আছে চব্বিশ পরগনা, নদীয়া, যশোর প্রভৃতি জেলার গ্রামাঞ্চল, বনগাঁ, রাণাঘাট মহকুমা শহর এবং কলকাতা মহানগরী। বিভূতিভূষণের সমগ্র উপন্যাসের কালগত বিস্তারও খুব সামান্য নয়। সমালোচক শ্রী সৌরেন বিশ্বাস জানিয়েছেন—“বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাসে ১৮৩০ খ্রীস্টাব্দ থেকে ১৯৪৩ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত কালগত বিস্তার বিদ্যমান”
শহরের জীবনে যখন নিরবচ্ছিন্ন ক্ষতির খতিয়ান—তখন এই বাংলাদেশেরই গ্রামপ্রান্তে একটা ‘সব পেয়েছি-র জগৎ' আছে। সেখানে দারিদ্র্য, দুঃখ, বেদনা, শোক সবই আছে, কিন্তু তাদের সমস্ত কিছুতে এমন একটি প্রশান্তি বিকীর্ণ হয়ে রয়েছে যে তার আশ্রয়ে এখনো নিশ্চিন্তে নিমগ্ন হয়ে থাকা যেতে পারে।
সে ধরণের উপন্যাসগুলিই এখানে একত্রিত করা হয়েছে।
সঙসপ্তক কাহিনী
আলেক্সিস কিভি (১০ অক্টোবর ১৮৩৪-৩১ ডিসেম্বর ১৮৭২) বেঁচে থাকতে তাঁর শ্রেষ্ঠ বই সঙসপ্তক কাহিনি-র সাফল্য দেখে যাননি। কিভি যে আধুনিক ফিনল্যান্ডের বরেণ্য লেখক এবং জাতীয় চেতনার পথিকৃৎ, একথা বুঝতে অনেক দেরি হয়েছে, এমনকি তাঁর স্বদেশেও। হেলসিঙ্কির রাউতাতিয়েন্তোরি চত্বরে, ফিনিশ জাতীয় নাট্যশালার সামনে, তাঁর মূর্তি বসানো হয় ১৯৩৯ সালে (ভাস্কর: ভ্যাইন্যো আলতোনেন)। বাংলার আগে মোট চৌত্রিশটা ভাষায় কিভির এই উপন্যাসের অনুবাদ বেরিয়েছে, তার মধ্যে এশীয় ভাষা আরবি, চিনে, জাপানি, তুর্কি, ফারসি, হিব্রু।
ফিনল্যান্ডের যে সাত ভাই এই অনূদিত উপন্যাসের নায়ক, তাদের সঙ্গে মহাভারতের ওই দৃঢ়সংকল্প সাহসী যোদ্ধাদের কিছু মিল সত্যিই পাওয়া যায়। কিন্তু ঙ আর দন্ত্য স দিয়ে “সঙ-সপ্তক” বানান কেন? বানানটার কাজ হল মনে করিয়ে দেওয়া যে ওই সাতজন তরুণকে ঠাট্টা করবার জন্যে শত্রুরা যে গান বেঁধেছিল তাতে ওদের বলা হয়েছিল সাতটা সঙ। লোকজনের নির্মম হেনস্তা গায়ে মেখে ওরা জীবনযুদ্ধে এমন রণনীতি বেছে নিয়েছিল যাতে বিদ্রুপের জবাব দিতে পারে। শত্রুদের চোখে চোখ রেখেই ওদের সেই অভাবনীয় জয়যাত্রা, যেটার গুণে এই উপন্যাস বিশিষ্ট সার্থকতা অর্জন করেছে।
এ গল্পের সঙ্গে বাঙালি পাঠকের কী সম্পর্ক? সঙসপ্তক কাহিনির মূল বিষয় হল, ব্রাত্যরা কীভাবে নিজেদের আত্মসম্মান অটুট রেখেও শিক্ষালাভ করে সমাজের মূলস্রোতে স্বীকৃতি পেতে পারে। দারিদ্র্য ও বঞ্চনার ফলে যেসব মানুষ বহু শতাব্দী ধরে শিক্ষার সুযোগ পায়নি, আজ তারা অভূতপূর্ব অনুপাতে ইস্কুল কলেজে যাচ্ছে। নয়া সাক্ষরের অদম্য উৎসাহে ভরা কৌতূহলী চোখে এদিক ওদিক তাকিয়ে জেনে নিচ্ছে কোন পথে চললে পরবর্তী প্রজন্ম এই দুর্দশার শৃঙ্খল কেটে বেরোতে পারবে। আমাদের সারা সমাজ জুড়ে এই যে বিরাট মন্থন চলছে, শিক্ষাপ্রাপ্তি আর মর্যাদালাভের দিকে এগিয়ে চলার এই নাটকীয় সময়টাকে পরিষ্কার বুঝতে পারবার জন্যে স্পষ্টতই বাঙালি পাঠকমাত্রেরই সঙসপ্তক কাহিনি পড়া উচিত।
অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র
কে না এডভেঞ্চার ভালোবাসে? আর তা যদি হয় এই চিরপরিচিত সমতল বাংলার ভূমি থেকে বহু বহু দূরে গহীন, বন্য, সভ্যতার আলোকহীন আফ্রিকায়, mountain of moon এ। বিভূতিভূষণ লিখেছিলেন এরকম কিছু এডভেঞ্চার যার সবকটিতেই আছে পাড়াগেঁয়ে বাঙালি। অত্যন্ত স্বাদু এই উপন্যাস গুলি প্রিয় সব বয়সেরই।
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ শিবনাথ শাস্ত্রী রচিত একটি গ্রন্থ। গ্রন্থটি ১৯ শতকের বাঙ্গালীর সমাজ-সংস্কৃতি-রাষ্ট্রনীতির এক উৎকৃষ্ট নির্ভরযোগ্য দলিল রূপে পরিচিত। রামতনু লাহিড়ীর সঙ্গে শিবনাথ শাস্ত্রীর পরিচয় ২২শে আগস্ট ১৮৬৯ সালে ও তার পর থেকে তা দীর্ঘ ২৯ বছরের গাঢ় পরিচয় ঘনীভূত হয়েছিল। প্রথমে শাস্ত্রী মশাই শুধু মাত্র রামতনু লাহিড়ীর জীবনী লিখবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু পরে তিনি দেখেছিলেন ১৮১৩ সাল থেকে ১৮৯৮ সাল পর্যন্ত রামতনু লাহিড়ীর জীবন ১৯ শতকের বাঙ্গালীর সমাজ-সংস্কৃতি-রাষ্ট্রনীতির ইতিহাসের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। তাই পরে ‘তৎকালীন বঙ্গসমাজ’ যুক্ত করেন। স্বভাবতই রামতনু লাহিড়ীর জীবনীসূত্রে ১৯ শতকের যেসব মনীষী নবজাগরণের সাথে প্রত্যক্ষ বা অপ্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন তারাও এই গ্রন্থে স্থান পেয়েছেন। জীবনীগ্রন্থ হিসাবে রচিত হলেও বইটির মূল্য যে এর ঐতিহাসিকতায় এ সম্পর্কে তিনি সচেতন ছিলেন।
পাইরেট পাইরেট
পাইরেট বললেই আমাদের মনে আঠেরোশো শতকের কথা ভেসে আসে , কিন্তু বাস্তবে এখনো জলযাত্রা আধুনিক পাইরেটদের থেকে নিরাপদ নয় আর তার সঙ্গে যদি জড়িয়ে যায় নানা ষড়যন্ত্র , যেখানে নামতে হয় আমেরিকান এবং বৃটিশ ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিকে তাহলে ব্যাপারটা আরো ঘোরালো হয়ে ওঠে। আবার এখানে দুই পশ্চিমা দেশের হয়ে কাজে নামে জন্মসূত্রে ভারত আর বাংলাদেশের দুই নারী পুরুষ। তারপর কি হলো? এই গতিশীল থ্রিলার পড়ে ফেলুন উত্তর জানতে।
অন্ধ প্রহর
দেশের অন্যতম প্রভাবশালী পরিবারের একমাত্র ছেলেকে ব্ল্যাকমেল করতে গিয়ে নিজেদেরই বিপদ ডেকে আনে দুই যুবক। ঘটনার ক্রমণিকায় তাদের সাথে জড়িয়ে পড়ে আরো অনেকেই। একটি মিথ্যে যেভাবে একাধিক মিথ্যের জন্ম দেয়, ঠিক একইভাবে একটি অপরাধের প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয় আরো অপরাধের। কিছু মানুষের ভুল-ভ্রান্তি, লোভ-লালসা আর অপরাধের বিস্তৃত ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয় এক জটিল সমীকরণের। যে-সমীকরণের সমাধান নিহিত আছে এক অন্ধ প্রহরে।
আমরা ঠিকই পেরিয়ে যাব
কোনো কোনো বই ভোরের নরম আলোর মতন স্নিগ্ধতা ও প্রত্যয়ে ভরে দেয় অন্তর।আকাশে বাতাসে যেন রমিত হতে থাকে--- আমরা ঠিক-ই পেরিয়ে যাব আঁধার রাতের ঝড়/ আঁধার রাতের ঝড় পেরোতে মানুষ-ই তো নির্ভর। এমন-ই এক কাব্যগ্রন্থ অমিতাভ দাশশর্মার “আমরা ঠিকই পেরিয়ে যাব…”। এ বইতে দুটি পর্যায়ে বিন্যস্ত হয়েছে কবিতা। গার্হস্থ্য পর্যায় এবং অন্তরীণ পর্যায়। গার্হস্থ্য পর্যায়ে কবি ছুঁয়ে ফেলেন আমাদের নৈমিত্তিকতার নানান দিকচিহ্ন--- ভেজা কাঠে আঁচ দিলে ধোঁয়া ওঠে খুব… ধোঁয়ায় ঘর-দোর মলিন হয়ে যায়…। অন্তরীণ পর্যায়ে কবি-কলমে ধরা পড়েছে মানুষের বর্তমান গৃহবন্দিত্বের যন্ত্রণা, একই সঙ্গে এই অতিমারী জয় করার প্রত্যয়।