
শিবাজী
আচার্য্য যদুনাথের মধ্যে ইতিহাস রচনার দু'টি দিক বিশ্লেষণাত্নক বিজ্ঞানধর্মী ও কাহিনী নির্ভরতার অনবদ্য সমন্বয় সাধিত হয়েছিল। ইংরেজি সাহিত্যে অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা তাঁর লেখা ইতিহাসকে কাষ্ঠশুষ্কতার পরিবর্তে প্রাঞ্জল ও সুখপাঠ্য করেছে। যদুনাথের মতে, লেখা হওয়া উচিত প্রাঞ্জল ও সংহত, সব তথ্য একত্রে সন্নিবিষ্ট করা সম্ভব নয়, লেখকের উচিত নিরপেক্ষভাবে তথ্য নির্বাচন।
যদুনাথ মনে করতেন, সাল-তারিখের ঘেরাটোপের বাইরেও ইতিহাসের একটি ব্যাপক রূপ আছে যা কাব্যধর্মী। তাঁর কথায়, "ইতিহাসকে যে আর্যগন ইতিকাব্য নাম দেন, সেটা বিদ্রূপের বিষয় নহে, এই নামের মধ্যে একটি নিগূঢ় মানব-সত্য নিহিত আছে।" তাঁর ব্যাখ্যায়, "ঐতিহাসিকের পক্ষেও কল্পনাশক্তির আবশ্যক। সত্যের ভিত্তিতে স্থাপিত সহস্র সহস্র ক্ষুদ্র তথ্যের সমাবেশের ফলে গঠিত, সংযত নিয়ন্ত্রিত কল্পনার সাহায্যে অগ্রসর, কবির মহান গঠনশক্তিতে রচিত, ভাষা ও ভাবের সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যে যে ইতিকাব্য, তাহাই প্রকৃত ইতিহাস নামের যোগ্য।"
তার লেখা অসংখ্য গ্রন্থের মধ্যেও "শিবাজী" একটি বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে, মুঘল যুগের পতনের ক্ষেত্রে আচার্যের কাজ যেমন অমূল্য, তেমনই শিবাজী ও আসলে তার সেই কাজেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
You have not rated yet!
AVG
total
No of rating