সৈয়দ মুজতবা আলী
Syd Mujtaba Ali
সৈয়দ মুজতবা আলি পাণ্ডিত্য আর হৃদয়বেত্তার সঠিক আনুপাতিক মিশেলে হাস্যরসকে বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী, কিছুটা প্রতিষ্ঠান বিরোধী, বর্ণময় এই মানুষটির জীবন পুরোপুরি রবীন্দ্ররসে জারিত ছিল। আলি সাহেব নিজেই লিখেছেন ‘এ আমি নিশ্চয় করে জানি যে, আমার মনোজগৎ রবীন্দ্রনাথের গড়া...’।
এই বিশিষ্ট মানুষটি শান্তিনিকেতনে ছাত্র হিসেবে আসেন ১৯২১ সালে।
১৯২৭’শে নন্দলাল বসু অঙ্কিত এবং কবিগুরু স্বাক্ষরিত ‘স্নাতক’ শংসাপত্র নিয়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন বিদেশে। বছর দুয়েক কাবুলে কাটিয়ে গেলেন জার্মানি। পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন বন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বে। তাঁর কাবুল যাত্রার বিবরণ ‘দেশে বিদেশে’ পড়ে মানস ভ্রমণ করেননি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এই বইটির মাধ্যমেই সৈয়দ মুজতবা আলি বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেন। তাঁর প্রতিটি লেখায় একই সঙ্গে পাণ্ডিত্য আর রসবোধ দুয়েরই প্রতাপ ছিল প্রবল।
লিখেছেন ছোটগল্প, উপন্যাস, রম্যরচনা। বিবিধ ভাষা থেকে শ্লোক ও রূপকের যথার্থ ব্যবহার, হাস্যরস সৃষ্টিতে পারদর্শিতা এবং এর মধ্য দিয়ে গভীর জীবনবোধ ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা তাঁকে বাংলা সাহিত্যে এক বিশেষ মর্যাদার আসনে বসিয়েছে। অনেকের মতে, ১৯৫০-৬০ দশকে মুজতবা আলী ছিলেন বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক।