নবনীতা মুখার্জী
Nabanita Mukherjee
এক একটা কবিতা ধরে এগোলে মনেহয় এটা একটা জার্নি। মানুষের মনের অলিন্দে অলিন্দে সাজানো প্রদীপের আলোয় আমাদের ঘোরাফেরা। "খেলাঘরের সালতামামি" কবিতার মাত্র দুটো পংক্তি তুলে নিয়ে শুরু করি বিচার, "খড় মানেতো মরণবাঁচন আঁকড়ে থাকা..." যেখানে বলছেন তার একটু পরেই বলছেন "ঘর মানেতো, অবুঝ বেড়ায় আগলে রাখা।" ঘরের এই যে ব্যাখ্যা, এই তিনটি মাত্র শব্দ খরচ করা আর তার মধ্যেই কত কিছু বলে দেওয়া আছে। এই একটা কবিতাতে থাকা যায় অনেকক্ষণ। প্রতিটা শব্দে ঘরের একটা ছবি এঁকেছেন নীরবে এবং গভীরভাবে। কবিরা চিরকালই সবার মাঝে থেকেও একা তাইতো তিনি অবলীলায় বলতে পারেন, "....মাঠের মাঝে দাঁড়িয়ে আছি একলা অমলতাস।" কিন্তু এ লেখা কি শুধু সেই একাকী গাছের? তবে কেন লেখা হল, "...হাত বাড়ালেই আকাশ তবু মাটিতে সম্পৃক্ত।" এখানেই, এভাবেই এক একটা লেখা চিরকালীন হয়ে উঠেছে ছোট্ট মোচড়ে। "কেউ কেউ সোহাগ পোষে বুকের খাঁচায়..." তাদের কী অবস্থা হয়? তারাই তো বলতে পারে, "শুঁড়িপথ ঝোলায় ভরে একলা হাঁটি।" একজায়গায় বলেছেন, "ইচ্ছে হল খামখেয়ালি নদীও...." আবার পরক্ষণেই বলছেন, "...ইচ্ছে হলে সঙ্গে থাকাই যায়..." এবং আশ্চর্য লেখাটা ওখানে শেষ হচ্ছে না। এর নামই মনেহয় লেখাকে অসীমের হাতে ছেড়ে রাখা। একটা জায়াগায় পাচ্ছি, "হঠাৎ যখন বর্ষা নামে খেরোর খাতায়..." এত সুন্দর কয়েকটা কথা বলার একটু পরেই বলছেন, "....বিজন ভোরে নিকিয়ে রাখি গোপন খামার।" সত্যিই তো আমরা মনের গভীরে এই আশা নিয়েই কি বাঁচি না?