কালীপ্রসন্ন সিংহ
Kaliprasanna Singha
কালীপ্রসন্ন সিংহ ঊনবিংশ শতকের একজন বাংলা-সাহিত্য আন্দোলনে অন্যতম একজন পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। মাত্র উনত্রিশ বছরের জীবনে তিনি সাহিত্য ও সমাজের উন্নয়নের জন্য অসংখ্য কাজ করেছেন। তিনি বিধবা বিবাহের একজন সমর্থক ছিলেন। বহু বিধবা দুখিনীর জীবন পরিবর্তন এর জন্য তিনি অকাতরে দান করেছেন। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর প্রিয় পাত্র ছিলেন তিনি। কালীপ্রসন্ন ১৮৪০ খ্রিঃ কলকাতার জোড়াসাঁকো অঞ্চলের বিখ্যাত জমিদার বংশে জন্মগ্রহণ করেন । হিন্দু কলেজে ভর্তি হয়েও প্রথাবদ্ধ পড়া সম্পূর্ণ করতে পারেননি তবে কলেজের অসম্পূর্ণ পড়া সম্পূর্ণ করেছিলেন একজন ইংরেজ গৃহশিক্ষকের সাহায্যে।
বিদগ্ধ বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হয়ে মাত্র ১৩ বছর বয়সেই বিদ্যোৎসাহিনী সভা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । এই সভা প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ ছিল স্বদেশের সর্ববিধ উন্নতি বিধান । তাইসভ্যদের আলােচনার মুখ্য বিষয়ই ছিল ভাষা সাহিত্য ও সমাজের নানাবিধ সমস্যা।
বিদ্যাসাগর প্রবর্তিত বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ বন্ধ করার জন্য বিদ্যাসাগর দেশব্যাপী যে আন্দোলন আরম্ভ করেছিলেন তাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন কালীপ্রসন্ন।
সাহিত্যক্ষেত্রে প্রবেশ করেছিলেন প্রধানতঃ নাটক রচনার মাধ্যমে । তার রচিত বাবু নাটক প্রকাশিত হয় ১৮৫৪ খ্রিঃ । পরবর্তী তিন বছরে প্রকাশিত হয় বিক্রমাের্বশী , সাবিত্রী সত্যবান ও মালতীমাধব । তৎকালীন বাবুসম্প্রদায়ের রুচিবিকৃতি ও সাধারণ সমাজব্যবস্থার ত্রুটিপূর্ণ দিকগুলির প্রতি কটাক্ষ করে বিদ্রুপাত্মক রচনা হুতােম প্যাঁচার প্রকাশ ১৮৬২ খ্রিঃ । হুতােম প্যাঁচা ছিল তারই ছদ্মনাম।
সংস্কৃত মহাভারত বাংলায় অনুবাদ করে নিজ খরচে তা প্রকাশ করা কালীপ্রসন্ন সিংহের জীবনের শ্রেষ্ঠ কীর্তি।